Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বরেন্দ্র অঞ্চলে টেকসই সেচ অভিযোজন পরিকল্পনা

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বরেন্দ্র অঞ্চলে টেকসই সেচ অভিযোজন পরিকল্পনা

ড. মো: আকরাম হোসেন চৌধুরী (সাবেক এমপি)

ভৌগোলিকভাবে অবস্থানগত দিক থেকে বরেন্দ্রভ‚মি বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিম অঞ্চলজুড়ে অবস্থিত রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের আওতাধীন ১৬টি জেলা নিয়ে গঠিত। বাংলাদেশকে নিয়ে যে ৩০টি এগ্রো-ইকোলজিক্যাল জোন গঠিত হয়েছে তাদের অন্যতম তিনটি এগ্রো-ইকোলজিক্যাল জোন (২৫, ২৬ এবং ২৭)  বরেন্দ্র ভ‚মির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এ অঞ্চলের ৪৭% উচ্চ ভ‚মি, ৪১% মধ্যম উচ্চ ভ‚মি এবং ১২% সমান ভ‚মি। খরাপ্রবণ বরেন্দ্রভ‚মির বৈশিষ্ট্য হলো সমদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৪০ মিটার উপরে এবং যে সমস্ত উচ্চ মধ্য ও সমতল ভ‚মি রয়েছে সেগুলোর উচ্চতা ১৯.৮ মিটার থেকে ২২.৯ মিটার পর্যন্ত।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের উপক‚লীয় অঞ্চলগুলো আগামী ৫০-১০০ বছরের মধ্যে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার  আশঙ্কা করেছেন আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়ার তাপমাত্রাজনিত কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা অতিরিক্ত বেড়ে গেলেও বরেন্দ্রভ‚মির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার চেয়েও বেশি হওয়ায় এ অঞ্চল বন্যাকবলিত হওয়ার আশঙ্কা তেমন নেই। তবে উপক‚লীয় অঞ্চলগুলো বন্যাতে তলিয়ে গেলে দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল তথা বরেন্দ্র ভ‚মিতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত শরণার্থীদের (ঈষরসধঃব জবভঁমব) ভিড় বাড়বে বলে সবাই আশঙ্কা করে থাকেন। স্বাভাবিক কারণেই তখন আমাদের খাদ্য সঙ্কট মোকাবিলায় নানান ধরনের উন্নত সমন্বিত কৌশলের আশ্রয় নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বরেন্দ্র ভ‚মির আপামর মানুষের অনেক করণীয় আছে। যার কতিপয় শর্ত আন্তর্জাতিক প্যারিস চুক্তিতেও বর্ণিত আছে। প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী আমাদের দেশের      আবহাওয়ার তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে। অন্যদিকে অবশ্যই ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে এই বৃদ্ধি সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সমীক্ষায় দেখা যায় শুধুমাত্র কৃষি ক্ষেত্র থেকে আমাদের দেশে কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ হয় বছরে ৮৬.৫৬ মিলিয়ন টন (সূত্র: ঙঁৎ ডড়ৎষফ উধঃধ, টহরাবৎংরঃু ড়ভ ঙীভড়ৎফ)।  
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলা কিছুটা সহজ হবে যদি আমরা এই নিঃসরণকে ঘবঃ তবৎড় ঊসরংংরড়হং অর্থাৎ শূন্য নিঃসরণে আনতে সক্ষম হই। আর তা বাস্তবায়ন করতে হলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে যে সমস্ত দুর্যোগ সৃষ্টি হচ্ছে যেমন- বন্যা, প্লাবন, খরা এবং অন্যান্য দুর্যোগজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় অভিযোজন বা স্বাঙ্গীকরণ (অফধঢ়ঃধঃরড়হ) পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) অবদানের কারণে আজকে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা বছরে ৪৫ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে পারছে। এর মূল কারণ হচ্ছে, বিএমডিএ পরিচালিত প্রায় ১৫ হাজার ৫০০ গভীর নলক‚পসহ শত শত পাতকুয়া এবং সোলার পাম্প চালিত লো-লিফ্ট পাম্পের (এলএলপি) মাধ্যমে সেচ সেবা প্রদান। উল্লেখিত গভীর নলক‚প, পাতকুয়া এবং সোলার পাম্প চালিত এলএলপির মাধ্যমে বিএমডিএ বরেন্দ্র অঞ্চলের ২৭ লাখ হেক্টর কৃষি জমির থেকে প্রায় ৫ লাখ ২৬ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আনতে পেরেছে।
এ প্রসঙ্গে একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া দরকার, বরেন্দ্র অঞ্চলে উল্লেখিত ৪৫ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন করার ক্ষেত্রে যে সেচের পানি ব্যবহার করা হয় তার ৯৬%ই আসে ভ‚গর্ভস্থ উৎস থেকে এবং বাকি ৪% আসে ভ‚পরিস্থ উৎস হতে। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রয়োজন মেটাতে বরেন্দ্র অঞ্চলে আরো খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। এক্ষেত্রে যদি আমরা ভ‚গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভর করে থাকি তাহলে একসময় পানির অভাবে খাদ্য উৎপাদনে বিপর্যয় ঘটবে। আর এটি হবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে। সে কারণে এখনই সময় বিএমডিএসহ এ অঞ্চলবাসীর সতর্ক হওয়া এবং আগামী প্রজন্মের কথা ভাবা। এজন্য খাদ্য উৎপাদনের স্বার্থে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ যেমন- বন্যা, খরা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ইত্যাদি থেকে ফসল তথা কৃষকের জীবনযাত্রারমান অব্যাহত রাখতে অভিযোজন বা স্বাঙ্গীকরণ পরিকল্পনা গ্রহণ (অফধঢ়ঃধঃরড়হ চষধহ ভড়ৎ     অপঃরড়হ) এবং কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। শস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে যে সেচ আমরা ব্যবহার করছি সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অভিযোজন বা স্বাঙ্গীকরণ (অফধঢ়ঃধঃরড়হ) পরিকল্পনা হতে পারে ভ‚গর্ভস্থ (টহফবৎমৎড়ঁহফ ডধঃবৎ) পানি উত্তোলনের পরিমাণ কমিয়ে ফেলে ভ‚পরিস্থ (ঝঁৎভধপব ডধঃবৎ) পানির ব্যবহারের পরিমাণ বৃদ্ধি করা। এক্ষেত্রে প্রথম ধাপেই বিএমডিএ-কে ভ‚পরিস্থ পানির ব্যবহার ৪% থেকে ৩০% এ উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে ভ‚গর্ভস্থ ৫০% এবং ভ‚পরিস্থ ৫০% পানির ব্যবহারে যেতে হবে। বিএমডিএ প্রতিষ্ঠানের  একক উদ্যোগে এ কাজ সহজ নাও হতে পারে। তবে সব সেক্টর বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরগুলো যেমন- পানি, কৃষি, বন ও পরিবেশ, ভ‚মি, মৎস্য ও প্রাণী, স্থানীয় সরকার, কৃষি, অর্থ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে এটি সহজেই করা সম্ভব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যাদের জন্য করা হচ্ছে অর্থাৎ কৃষক বা স্থানীয় জনগণ সকলকেই এই পরিকল্পনার সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। কেননা তাদের সহযোগিতা পাওয়া গেলেই কেবল স্থানীয়ভাবে এ ধরনের অভিযোজন বা স্বাঙ্গীকরণ (অফধঢ়ঃধঃরড়হ) পরিকল্পনা সফল হবে।
বছর পাঁচেক আগে ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং      (আইডবিøউএম) এর এক গবেষণা প্রতিবেদনে একটি           সুপারিশমালা প্রকাশিত হয়েছিল যার মূলকথা হচ্ছে, খাদ্য উৎপাদনের স্বার্থে বিএমডিএ-কে ভ‚গর্ভস্থ এবং ভ‚পরিস্থ উভয় উৎস থেকে যুগৎপদভাবে সেচের পানি ব্যবহার করতে হবে (ঈড়হলঁহপঃরাব ঁংব ড়ভ নড়ঃয ঃযব ংঁৎভধপব ধহফ মৎড়ঁহফধিঃবৎ) সে কারণে বিএমডিএর উদ্দেশ্য হবে সকল প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর সাথে (যেমন- পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, ভ‚মি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়,  স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়) যৌথভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এবং    হাওড়-বাঁওড় উন্নয়ন বোর্ডের ধারায় বরেন্দ্র উন্নয়ন বোর্ড (যার চেয়ারম্যান হবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং নিজেই) গঠন করা এবং সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ও সচিব এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ডের মাধ্যমে এই অভিযোজন বা স্বাঙ্গীকরণ (অফধঢ়ঃধঃরড়হ) পরিকল্পনা একটি যৌথ মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় গৃহীত ও বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই বরেন্দ্র অঞ্চল এবং বিএমডিএ সারা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলতে পারবে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন- কৃষি, পানি, বিদ্যুৎ, ভ‚মি, মৎস্য ও প্রাণী, বন ও পরিবেশ, অর্থ ও পরিকল্পনা ইত্যাদি বিভাগগুলোকে সমন্বয়ের মাধ্যমে বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য একটি লাগসই এবং টেকসই অভিযোজন বা স্বাঙ্গীকরণ (অফধঢ়ঃধঃরড়হ) পরিকল্পনা  গ্রহণ করা উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্তকরণে বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য একটি স্বতন্ত্র বরেন্দ্র উন্নয়ন বোর্ড ও যৌথ মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণের এখনই সময়। য়

চেয়ারম্যান, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী, মোবাইল : ০১৭৭৭৭১৯৩৪৫, ই-মেইল : পযধরৎসধহ@নসফধ.মড়া.নফ


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon